Thursday, May 29, 2014

বাংলাদেশী আয়েশা উদ্ভাবন করলেন কৃত্রিম মানব ফুসফুস


বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের বিজয় রথে আবার সাফল্য বয়ে নিয়ে এসেছে আয়েশা আরেফিন টুম্পা নামের একজন তরুণ নারী বিজ্ঞানী। ন্যানো-প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করেছেন কৃত্রিম মানব ফুসফুস।
২০১১ সালে আমেরিকার আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরির গবেষক ক্রিস ডেটার বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত এক কাজে এসে এরকমই এক সম্ভাবনাময় জিন বিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিনের দেখা পান। ডেটার ও তাঁর সহকর্মী ল্যান্স গ্রিনের একান্ত সহযোগিতার ফলেই আয়েশা লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরিতে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ পান। টুম্পা বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকোতে ন্যানো-সায়েন্সের উপর ডক্টরেট করছেন। একই সাথে লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরিতে চলছে তাঁর গবেষণা।
আয়েশা তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরির বায়ো-সিকিউরিটি বিভাগে। এরপরেই ঐ ল্যাবের ভারতীয় গবেষক প্রখ্যাত টক্সিকোলজিস্ট রাশি আইয়ার আয়েশাকে অপ্টোজেনিক্স সঙ্ক্রান্ত গবেষণা কাজের জন্য নিয়োগ দেন। প্টোজেনিকস হচ্ছে জিন-বিদ্যা ও প্রোটিন প্রকৌশল(ইঞ্জিনিয়ারিং) এর মাধ্যমে জীবন্ত টিস্যুর মাঝে ঘটতে থাকা বিভিন্ন স্নায়বিক কাজ (neuron activity) নিয়ন্ত্রণ করা। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও কৃত্রিম টিস্যু বা কলা তৈরি করা সম্ভব।
আয়েশা ও রাশি আয়ারের দলের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট বিষক্রিয়া, রোগ ও কৃত্রিম অংগ সংস্থাপনের জন্য সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন। তাঁরা একটি কৃত্রিম মানব ফুসফুস তৈরি করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, Chronic Obstructive Pulmonary Disease এর সময় ফুসফুসের কোষগুলো কিভাবে কাজ করে তা জানা ও এর প্রতিষেধক উদ্ভাবন করা।। এটি হচ্ছে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভয়াবহ রোগ যাতে আমেরিকার অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আয়েশা একই সাথে বিভিন্ন স্নায়বিক ব্যাধি ও মস্তিষ্কে রক্ত-ক্ষরণ নিয়েও গবেষণা করছেন।
বাংলাদেশী বিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিন টুম্পা ভবিষ্যতে দেশে ফিরে এসে মানুষের জন্য কাজ করতে আগ্রহী। দেশে থাকাকালীন সময়ে তিনি নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি এইচ আই ভি/এইডস নিয়ে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করেছেন। তাঁর ইচ্ছা দেশে এসে নিজের বাড়িতে একটি স্কুল খোলার। যেখানে যে কোন শিশু বিজ্ঞান ও গণিত পড়ার সুযোগ পাবে।
আয়েশা আন্তরিকভাবেই বিশ্বাস করেন ভাগ্য ও আশেপাশের কিছু মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাঁর এই সাফল্য আসতো না। তিনি বলেন, “ আমি আমার গবেষণাগারের, এর মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আনন্দিত যে ব্যতিক্রম কিছু করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি আরো বলেন লস আলামসে কর্মরত অন্য অনেক দেশের গবেষক বিশেষ করে মন্টেনিগ্রোর গবেষক Momo Vuyisich তাঁর জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন

ধানি জমি থেকে বছরে ৫০ মিলিয়ন কার্বন বিক্রির সম্ভাবনা



পৃথিবীর উষ্ণতা ধীরে ধীরে বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষ উদ্বিগ্ন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে শিল্পবিপ্লবের পরপরই মূলত বিশ্বে বায়ুম-লের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময়ের পর থেকে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন কয়লা, তেল বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেনের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে পরিবেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে সূর্য থেকে যে পরিমাণ তাপ পৃথিবীতে পতিত হচ্ছে, ঠিক সে পরিমাণ তাপ প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যেতে পারছে না। এর ফলে তাপের একটা অংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন শোষণ করে এরা নিজেরা যেমন উত্তপ্ত হচ্ছে, তেমনি গোটা বায়ুম-লকেও উত্তপ্ত করে তুলছে। আমাদের বায়ুম-লের জলীয় বাষ্প প্রায় ৩৬ থেকে ৭০ শতাংশ, কার্বন ডাই-অক্সাইড ০৯ থেকে ২৬ শতাংশ, মিথেন ০৪ থেকে ০৯ শতাংশ, ওজোন ০৩ থেকে ০৭ শতাংশ পর্যন্ত গ্রিনহাউসের জন্য দায়ী বলা যেতে পারে। তবে এর মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস নানা কারণে পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী। কারণ মানুষ খুব দ্রুত বায়ুম-লে এ গ্যাসগুলোর পরিমাণ বৃদ্ধি করছে ও অদ্যাবধি করে চলেছে। এ কারণে বিশ্বে বায়ুম-লের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি গবেষণা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে যে পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো হয়, তা থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ২১.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। এর একটা অংশ সবুজ গাছপালা সালোক-সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় তাদের খাদ্য প্রস্তুতির জন্য ব্যবহার করে নিজের ভেতরে কার্বন সংবন্ধন করে থাকে। তারপরও প্রতি বছর ১০.৬৫ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুম-লে অতিরিক্ত হিসেবে জমা হচ্ছে।

বর্তমানে শিল্পায়নের যুগে যেখানে উন্নত দেশগুলো মাত্রারিক্ত কার্বন তথা কার্বনডাই-অক্সাইড ও মিথেনের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ করে পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে, সেখানে বাংলাদেশ নিঃসরিত এসব কার্বন গ্রহণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে বিশ্বম-লকে রক্ষা করছে। কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস নিঃসরণে ধান গাছের প্রভাব শীর্ষক প্রকল্পের ওপর দীর্ঘ ৯ বছর গবেষণা করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটন করতে সফল হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল বাতেন। কার্বন ডাই-অক্সাইড নিয়ে এশিয়ার পবিবেশ সংস্থা এশিয়া ফ্লাস্কের নিবন্ধনকৃত তিনি প্রথম বাংলাদেশী গবেষক, যিনি পরিবেশ থেকে কার্বনডাই-অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস নিঃসরণে ধান গাছের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটনে সফলতা পেয়েছেন। তাকে এ গবেষণায় সাহায্য করছেন জাপানের দুইজন গবেষক ড. আকিরা মিয়াতা ও ড. মাসায়সি মানো।

জানা যায়, জাপান সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত 'কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেন গ্যাস নিঃসরণে ধান গাছের প্রভাব' প্রকল্প নিয়ে ২০০৬ সাল থেকে বিদেশি সব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রায় ৯ বছর গবেষণা করে তিনি এ সাফল্য পান। এশিয়ার মধ্যে জাপান ও কোরিয়ার পর তার নেতৃত্বে তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করে বিস্তর গবেষণা শেষে তিনি এমন সাফল্যও পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন ড. বাতেন।

ড. আবদুল বাতেন গবেষণা কর্মকা- সম্পর্কে বলেন, আমি ২০০৬ সালে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমেরিকা থেকে অত্যাধুনিক যন্ত্র Li-cor ৭৫০০ ও Li-cor ৭৭০০ নিয়ে এসে বাকৃবি গবেষণা খামারে গবেষণা শুরু করি। বর্তমানে এগুলোর সাহায্যে সরাসরি জাপান থেকেও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ যন্ত্রের সাহায্যে প্রায় ৯ বছর ধানের ওপর বাতাসের কার্বনডাই-অক্সাইডর ঘন মাত্রা, জলীয় বাষ্প, তাপমাত্রা ইত্যাদি নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছি। গবেষণার ফলে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আমাদের দেশের ৭০ শতাংশ আবাদি ধানি জমি বায়ুম-ল থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন টন কার্বন অথবা ১৮৪ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস পরিবেশ থেকে গ্রহণ করছে।

কার্বন ক্রেডিট বা কার্বনের বাণিজ্যিকীকরণ সম্পর্কে ড. বাতেন বলেন, যেখানে উন্নতর দেশগুলোর শিল্পায়নের কারণে বায়ুম-লে কার্বন ডাই-অক্সাইডর পরিমাণ প্রতি বছর প্রায় ২ পিপিএম বা তারও বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যারা সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্বডাই-অক্সাইড নির্গমন করে, তারা হলো চীন ২২.৩০ শতাংশ, আমেরিকা ১৯.৯ শতাংশ, ভারত ৫.৫০ শতাংশ, রাশিয়া ৫.২৪ শতাংশ, জাপান ৪.২৮ শতাংশ। তবে কিউটো প্রটোকল অনুযায়ী, বিশ্বকে উষ্ণতার হাত থেকে রক্ষা করে বসবাসের উপযোগী করে তুলতে উন্নত দেশগুলো তাদের দেশ থেকে ৫ শতাংশ কার্বন কমানোর সমপরিমাণ কল-কারখানার কমিয়ে ফেলবে। তবে যদি তারা তা করতে না চায়, তবে তারা সবুজ পরিবেশের দেশ থেকে ওই পরিমাণ কার্বন কিনতে পারবে, যে পরিমাণ কার্বন ওই সবুজ দেশের পরিবেশ-প্রকৃতি থেকে গ্রহণ করে পরিবেশকে উষ্ণতার হাত থেকে রক্ষা করছে। এর জন্য এর আগে বছরগুলোতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে শিল্পোন্নত দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণস্বরূপ ২৮০ মিলিয়ন ডলার তহবিল দিতে সম্মতি জানায়। যদিও চুক্তিটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৫ সালে প্যারিস সম্মেলনে, তার পরও এতে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো আর্থিক সহায়তা পেলে বনায়নের দিকে কিছুটা ধাবিত হবে।

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে ১১.৫৩ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে প্রতি বছর চাষ করা হয় আউশ, আমন, বোরো_ যা প্রতিনিয়ত বায়ুমন্ডেল থেকে গ্রহণ করে শুধু দেশেই নয়, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বিশ্ব উষ্ণতা প্রতিরোধে। তাই আমাদের দেশের এ সবুজ পরিবেশ প্রতি বছরে যে ৫০ মিলিয়ন টন কার্বন গ্রহণ করছে, তা আমরা উন্নত বিশ্বের দেশের কাছে বিক্রি করতে পারি। তাই বাংলাদেশ ধানি জমির ৫০ মিলিয়ন টন পরিমাণ কার্বন উন্নতর দেশের কাছ থেকে কার্বন ক্রেডিট করতে পারে। তেমনি উন্নত দেশগুলো তাদের দেশ থেকে কল-কারখানা না কমিয়ে তাদের শিল্প উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ তার সুন্দরবন, মধুপুর, বান্দরবানের মতো বনভূমির দ্বারা গ্রহণকৃত কার্বন থেকে কার্বন ক্রেডিটের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

মহিষের জিনোম সিকোয়েন্স শনাক্ত করল বাংলাদেশী গবেষকরা

প্রথম কোনো প্রাণীর জীবন রহস্য উন্মোচন করলেন বাংলাদেশের একদল বিজ্ঞানী। ‘ব্ল্যাক গোল্ড’ নামে খ্যাত পশু মহিষের জিন নকশা উন্মোচনের মাধ্যমে জীববিজ্ঞানের গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। ২৪ তারিখ বিকেলে রাজধানীর র‍্যাডিসন হোটেলের বল রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চীনের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রকল্পটি জীববিজ্ঞানী, বায়ো-ইনফরমেটিশিয়ান ও তথ্য-প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত একদল গবেষক মহিষের জেনোম উপাত্ত থেকে জৈবিক উপাদান শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করেছেন। এ গবেষণায় পাওয়া উপাত্তগুলো মহিষের উন্নত ও অধিক উৎপাদনশীল জাত উন্নয়নে সহায়ক হবে। গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশের লাল তীর লাইভস্টক লিমিটেড ও গণচীনের বিজিআইর বিজ্ঞানীরা।
এ গবেষণায় পাওয়া জীনের আকার ২ দশমিক ৯৪৬ এন। এ গবেষণায় মোট ২১ হাজার ৫৫০টি জিন শনাক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গবেষণা কাজে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ দলের প্রধান লাইভস্টক গবেষক মনিরুজ্জামান বলেন, মহিষ বাংলাদেশের প্রাণীজ আমিষের একটি বৃহৎ উৎস। দেশের প্রাণীজ আমিষের মূল যোগানদাতাদের মধ্যে মাংস ও দুধের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে মহিষ পালন থেকে। বাংলাদেশের উপকূলীয় ও নদী বিধৌত অঞ্চলে মহিষ পালন করা হয়। সারা বিশ্বে বিশেষত ভারত ও পাকিস্তানে মহিষ খামারে পালন করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো মহিষ সনাতন পদ্ধতিতে পালন করা হয়।
আমাদের দেশে মহিষের খামার গরুর খামারের তুলনায় বেশি লাভজনক। কারণ গরুর তুলনায় মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। গরুর তুলনায় মহিষের মাংস-দুধও বেশি পুষ্টিকর। মহিষের দুধে স্নেহজাতীয় পদার্থের পরিমাণ প্রায় ৮ শতাংশ, যেখানে গরুর দুধে এর পরিমাণ ১ থেকে ৩ শতাংশ। মহিষের মাংসে তুলনামূলক চর্বিও অনেক কম। এছাড়াও মাথাপিছু মাংস ও দুধ উৎপাদনশীলতায় মহিষ গরু থেকে অধিকতর উৎপাদনশীল।
বিজ্ঞানী ড. মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ মহিষ পালনে এশিয়ায় নবম স্থানে। দেশে মহিষের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এফএও-এর এক গবেষণায় পাওয়া যায়, বাংলাদেশে দৈনিক মাথাপিছু দুধের চাহিদা ২৫০ গ্রাম। কিন্তু সরবরাহের পরিমাণ মাত্র ৩০ গ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী দেশে মাথাপিছু মাংস সরবরাহের পরিমাণ বছরে মাত্র ৭ দশমিক ৪৬ কেজি। যেখানে চাহিদা ৮০ কেজি হওয়া দরকার। মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ভোলার সুবর্ণ চর এবং ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর থেকে গবেষণা উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। মূলত ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে বিজিআইর সহযোগিতায় এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।